নিজস্ব প্রতিনিধি:
খাগড়াছড়ি জেলায় বসবাসরত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে বহু মানুষ অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসের ফলে হার্ট এটাক, স্ট্রোক ও অন্ধত্বের শিকার হচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিসসহ অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ
(এনসিডি) কর্মসূচীর উদ্যোগে ও ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সহযোগিতায় চট্রগ্রাম বিভাগসহ সারা দেশের ৩১০টি উপজেলায় হৃদরোগে মৃত্যুহার কমাতে কাজ শুরু হয়েছে।
এই লক্ষ্যে খাগড়াছড়ি জেলায় কর্মরত সরকারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের অংশগ্রহণে ৬-৮ মে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা খাগড়াছড়ি সিভিল সার্জন অফিসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।
খাগড়াছড়ি জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবের’র সভাপতিত্বে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এর বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ প্রোগ্রামের এডিশনাল প্রোগ্রাম ডিরেক্টর ডা: মাহফুজুর রহমান ভূইঁয়া।
এ সময় খাগড়াছড়ি জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রতন খীসা, সকল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাবৃন্দ, মেডিকেল অফিসার, সিনিয়র স্টাফ নার্স, উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, হেলথ এডুকেশন অফিসার, স্টোরকিপার ও পরিসংখ্যানবিদগণ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন এর বাংলাদেশ হাইপারটেনশন কন্ট্রোল ইনিশিয়েটিভ প্রোগ্রামের চট্টগ্রাম বিভাগের ডিভিশনাল প্রোগ্রাম অফিসার ডা. শাহিনুল ইসলাম এবং সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসার ডা. রাইসুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ছাবের বলেন, ‘এ বছরের মধ্যে দেশে হৃদরোগ জনিত মৃত্যুরহার এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে শতকরা ২৫ ভাগে, উচ্চ রক্তচাপের ব্যাপকতা কমিয়ে ১৮ ভাগে নিয়ে আসা এবং একই সাথে লবণ ব্যবহারের হার শতকরা ২৫ ভাগ কমানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে খাগড়াছড়ি জেলার সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর এনসিডি কর্ণারের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিস সহ অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকার বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা, পরামর্শ ও ঔষধ প্রদান করছে। এদেশে প্রতি চারজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপের রোগী পাওয়া যায়, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এই কর্ণার গুলো থেকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রাপ্তবয়সী সকলকে আধুনিক ডিজিটাল মেশিনের মাধ্যমে রক্তচাপ পরিমাপ করা হবে। সকল রোগীর তথ্য সিম্পল এ্যাপস ব্যবহার করে সংরক্ষণ করা হবে এবং
তাদের উচ্চরক্তচাপ ও ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণের হার মনিটরিং এর কাজ করা হবে।
প্রেসক্লাবের সভাপতি তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য সরকারের এই উদ্যোগকে যুগান্তকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে এই সেবার বার্তা পোঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
প্রশিক্ষণের শেষে সিভিল সার্জন সকল উপজেলার এনসিডি কর্ণারে রোগীর সেবা ডিজিটালাইজেশনের লক্ষ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাবৃন্দের নিকট ট্যাবলেট ডিভাইস হস্থান্তর করেন।